'আমার দুই জমজ ভাই একসঙ্গে মানুষ ইইছে। বড় ভাইয়ের লগে সন্ধ্যায়ও আমার কথা হইছে। এক লগে এক পরিবারের তিনজনরে আল্লাহ পুড়ায় কেমনে?'<br /><br />ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গের সামনে এভাবেই আহাজারি করছিলেন বোন জরিনা বেগম। আগুনে পুড়ে তার দুই ভাই ও ভাতিজার মৃত্যু হয়েছে।<br /><br />নিহত দুই ভাই হলেন- অপু (২৯), মো. আলী (৩২)। আর ভাতিজার নাম আরাফাত (৩)।<br /><br />জরিনার আরেক ভাই আছেন। তার নাম দিপু। তিনিও ওই নিহত দুই ভাইয়ের সঙ্গে একই ভবনে ব্যবসা করতেন। কামাল টাওয়ারে তাদের অপু এন্টারপ্রাইজ নামে একটি দোকান ছিল।<br /><br />বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ঢামেকে সরেজমিন দেখা যায়, নিহতদের স্বজনদের ভিড়। চারদিকে কান্না। অনেকের মরদেহ পুড়ে যাওয়ায় শনাক্ত করাও কঠিন হয়ে গেছে। বোঝার উপায় নেই কে কার স্বজন।<br /><br />দিপু বলছিলেন, রাত সোয়া ১০টার দিকের ঘটনা। আমি ১০টার দিকে দোকান থেকে বেরিয়ে যাই। এরপর বড় ভাই মো. আলী আমাকে কল করেন। রাস্তায় শব্দের কারণে কিছু বুঝতে পারি নাই। তবে আমার সন্দেহ হচ্ছিল, কিছু ঘটল নাতো? দ্রুত ফিরে গিয়ে দেখি ধোঁয়া আর ধোঁয়া। মহূর্তেই আগুন কামাল টাওয়ারেও ছড়িয়ে পড়ে।<br /><br />তার অভিযোগ, কামাল টাওয়ারে আমাদের দোকান অপু এন্টারপ্রাইজ। আগুন দোকান থেকে ২ মিনিটের গজ দূরের ভবনে লাগে, যেখানে ক্যামিকেলের গোডাউন ছিল। ক্যামিকেলের আগুন এখানে লাগে কেন। এই বিচার আমি কাকে দেব?<br /><br />রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের ভবনগুলোতে লাগা ভয়াবহ আগুনে দগ্ধ অন্তত ৭০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে নেয়া হয়েছে।<br /><br />বুধবার রাত পৌনে ১১টার দিকে চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের একটি ভবন থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে স্থানীয়রা জানান। পরে তা পাশের ভবনগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। সর্বশেষ রাত ৩টার দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ২০০ কর্মী। তবে ছোট গলি ও পানির স্বল্পতার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রচণ্ড বেগ পেতে হয়।