<p>ভূতের ভবিষ্যৎ সিনেমা-সহ একাধিক সিনেমার শুটিং হয়েছে এই বাড়িতে। এখানে এসেছিলেন উত্তম কুমার, সুপ্রিয়া দেবী, সত্যজিৎ রায়ের মতো বিখ্যাত ব্যক্তিত্বরা। সাড়ে তিনশো বছর পেরিয়ে আজও ঐতিহ্য মেনেই চলছে শ্রীরামপুরের জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজো ৷</p><p>বাংলার নবাব আলিবর্দির খাঁ'র শাসনকালের পর থেকেই এই শ্রীরামপুরের জমিদারি ফুলে ফেঁপে উঠেছিল। বিশেষ করে শ্রীরামপুরে দিনেমারদের উপনিবেশ (পর্তুগিজ) থাকাকালীন রাজ পরিবারের বংশধর হরি নারায়ণ গোস্বামী দেওয়ান থাকার সুবাদে প্রভূত পতিপত্তি ও অর্থলাভ শুরু হয়। জমিদারি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশাল অট্টালিকা তৈরি করেন। বিরাট নাট মন্দির ঠাকুর দালান তৈরি হয়, সেখানেই রাধা গোবিন্দ ও দুর্গাপুজো শুরু হয়। আর এই পুজোকে নিয়ে নানা ইতিহাস রয়েছে। </p><p>ঐতিহাসিক এই দালানবাড়িতে এখনও চোখে পড়ছে বড় বড় গম্বুজ। গায়ে আলপনা আঁকা। ঠাকুর দালানে তৈরি হচ্ছে দেবী মূর্তি। দেওয়ালে দেওয়ালে শব্দ প্রতিধব্বনি হয়ে ফিরছে কানে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, বিখ্যাত কবিয়াল ভোলা ময়রা থেকে অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি এই জমিদার বাড়ির কবিগান করে গিয়েছেন। বর্তমানে এই জমিদার বাড়ির প্রাচুর্য ও জৌলুস না থাকলেও রীতিনীতি মেনে আজও পুজো হয়ে আসছে। খিলান যুক্ত বারান্দা ও বিশাল বিশাল স্তম্ভ অন্যান্য রাজবাড়িকে থেকে অনেকটাই পৃথক করে। এই বাড়িতেই এসেছেন গান্ধিজি, নেতাজি থেকে বিধান চন্দ্র রায়-সহ বহু ব্যক্তিত্ব।</p><p>এছাড়াও বিভিন্ন বিখ্যাত চলচ্চিত্রে এই জমিদার বাড়িতে শুটিং করা হয়েছে। সত্যজিৎ রায়, উত্তম কুমার, সুপ্রিয়া দেবী-সহ একাধিক পরিচালক ও শিল্পী শুটিংয়ের জন্য এসেছিলেন। শ্রীরামপুর রাজবাড়ির তরফে নবম বংশধর অনিন্দ্য কুমার গোস্বামী বলেন, "হরি নারায়ণ গোস্বামীর পর রঘুরাম গোস্বামী শ্রীরামপুর জমিদার বাড়ির প্রসার ঘটান। উত্তম কুমার, সুপ্রিয়া দেবী, সত্যজিৎ রায় এখানে এসেছিলেন। ভূতের ভবিষ্যৎ সিনেমা-সহ একাধিক সিনেমার শুটিং হয়েছে এই বাড়িতে। নেতাজি থেকে বিধান চন্দ্র রায় এই বাড়িতে এসেছিলেন। দেশ-বিদেশ থেকে বহু মানুষ আসেন এই শ্রীরামপুরের রাজবাড়ির পুজো দেখতে।"</p><p>রাজবাড়ির আরেক বংশধর সোমলগ্না গোস্বামী বলেন, "আমাদের তিন পুরাণ মতে একটি পুঁথি আছে। বর্তমানে অষ্টমীর পরিবর্তে নবমীর দিন কুমারী পুজো হয়ে আসছে। আমরা বৈষ্ণব যদিও সন্ধিপুজো শাক্ত মতে হলেও বলিপ্রথা নেই। দশমীর দিন বাড়ির মহিলারা ইলিশ মাছ খেয়ে, মুখে পান দিয়ে মা দুর্গাকে বরণ করেন। মা চতুর্দলায় নিরঞ্জনের উদ্দেশে বেরোন ৷"</p>