<p>এক সময় ছিল হাতির ভয়, আর সেই ভয়েই পুজো থেকে দূরে ছিলেন মহিলারা। তবে এখন সাহস জুগিয়ে নিজেদের পাড়ার পুজোয় মেতে উঠতে চলেছেন জঙ্গলমহল অধ্যুষিত ভাদুলিয়ার মহিলারা। প্রায় শ'দেড়েক পরিবার এই পুজো করতে চলেছে এবার ৷</p><p>পশ্চিম মেদিনীপুরের গুড়গুড়ি পাল থানার অন্তর্গত রয়েছে ভাদুলিয়া গ্রাম। এই ভাদুলিয়া গ্রাম জঙ্গলমহল অধ্যুষিত। এই গ্রামে এত ঘন জঙ্গল যে হাতির দৌরাত্ম্য তো রয়েইছে, সেইসঙ্গে প্রায় সময় শেয়ালেরও উৎপাত দেখা দেয়। </p><p>এক সময় রয়েল বেঙ্গল টাইগারের দেখা মিলেছিল ঠিক এখানেই। এই গ্রামের ক'য়েক হাজার মানুষ দুর্গাপুজোর জন্য কয়েক কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে যেতেন অন্য গ্রামে। পুজোয় অংশগ্রহণ করে অঞ্জলি দিলেও ফেরার আতঙ্ক থাকত তাঁদের মধ্যে। এভাবে চলতে চলতে অবশেষে নিজেরাই উদ্যোগী হলেন দুর্গাপুজো আয়োজনে। তিনটি গ্রামের প্রায় শ'দেড়েক পরিবার মিলে শুরু করল দুর্গাপুজোর আয়োজন ৷ </p><p>তাঁদের জীবিকা চাষবাস, মুরগি চাষ, শালপাতা তৈরি করা। মূলত দুর্গাপুজোর উদ্যোক্তা গ্রামের মহিলারা। সারাদিন সংসার এবং বাকি কাজকর্ম সেরে তাঁরা বেরচ্ছেন চাঁদা তুলতে। প্রথম বছর নিজগ্রামে পুজোর আয়োজন সঙ্গে অঞ্জলি ৷ এমনটা ভেবে আনন্দে শিহরিত ক'য়েকশো মহিলা। তাঁদের বক্তব্য, আর হাতির আতঙ্ক নয় বরং এর থেকে দূরে থাকতেই পুজোর আয়োজন।</p><p>এ বিষয়ে পুজো উদ্যোক্তা সুলেখা সিং, পূর্ণিমা ঘোষরা বলেন, "এত বছর ধরে আমাদের গ্রামে পুজো হয়নি ৷ তিন-চারটি গ্রাম পেরিয়ে পুজো অঞ্জলি দিতে যেতাম। একদিকে ছিল হাতির আতঙ্ক অন্যদিকে ছিল ঘন জঙ্গল। আমরা দীর্ঘদিন সেই আতঙ্কেই দিন কাটিয়েছি। অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটেছে ৷ আমরা এরপর মনে মনে ঠিক করেছিলাম দুর্গাপুজো করব। এবছর সেটা পূরণ হচ্ছে ৷ পাশাপাশি, গ্রামের একটা নতুন নামও পাওয়া গিয়েছে ভাদুলিয়ার পরিবর্তে পলাশ গাঁ। আমাদের এবারের পুজো স্মরণীয় হয়ে থাকবে ৷"</p>