<p>শুরুতে ভট্টাচার্যদের পুজো হিসেবেই পরিচিত ছিল এই দুর্গোপুজো। পরে এই পরিবারের সদস্য আশুতোষ ভট্টাচার্য কলকাতার সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ হন। তাঁর পাণ্ডিত্য ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে। শাস্ত্রী উপাধি পান তিনি। সেই থেকে এই বাড়ির নাম হয় শাস্ত্রী বাড়ি। পরিবারের বর্তমান সদস্যরা জানান, আশুতোষ শাস্ত্রীর সময়েই পুজোর রমরমা বাড়ে। </p><p>এই এলাকার প্রাচীন ইতিহাসে কথিত রয়েছে, কলকাতার কালীঘাট থেকে আদি গঙ্গার প্রবাহমান ধারা বয়ে যেত দক্ষিণ বিষ্ণুপুরের মহাশ্মশানে। আদিগঙ্গা দিয়েই আগে ব্যবসা-বাণিজ্য ও যাতায়াত করত ইংরেজ থেকে শুরু করে এলাকার জমিদাররা। </p><p>তন্ত্রমতে দেবীর পুজো </p><p>লোকমুখে কথিত, তৎকালীন সময়ে তন্ত্রসাধনা করে এলাকায় নাম ডাক করেছিলেন বামাচরণ ভট্টাচার্য । তারপর এক জমিদার প্রণামীস্বরূপ বামাচরণ ভট্টাচার্যকে তাঁর জমিদারের অংশ থেকে বেশকিছু জমি দান করেন ৷ এরপর বামাচরণ 1593 সালে দক্ষিণ বারাসতে ভট্টাচার্য বাড়ির সুবিশাল দালান বাড়ি প্রতিষ্ঠা করে নিজের হাতে দুর্গা প্রতিমা তৈরি করে পুজো শুরু করেন । তান্ত্রিক হওয়ার জন্য তন্ত্র মতে দেবীর আরাধনা করতেন ৷ সেই থেকে এখনও এখানে তন্ত্র মতেই পুজো হয় । এই পরিবারের দুর্গাপুজো এ বছর আনুমানিক 432 বছরে পদার্পণ করল। </p><p>কীভাবে ভট্টাচার্যদের দুর্গাপুজো শাস্ত্রী হয়ে গেল ? </p><p>এর পিছনে লুকিয়ে রয়েছে প্রাচীন ইতিহাস ৷ এই পরিবারেরই সদস্য আশুতোষ ভট্টাচার্য কলকাতার সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ ৷ তাঁর পাণ্ডিত্য ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে। শাস্ত্রী উপাধিতে ভূষিত হন তিনি ৷ সেই থেকে ভট্টাচার্য বাড়ির নাম হয় শাস্ত্রী বাড়ি। প্রায় 432 বছরের এই পুজোর রীতিনীতিতে তেমন পরিবর্তন হয়নি বলেই জানালেন শাস্ত্রী বাড়ির সদস্যরা। এখনও এই পুজোয় চালু রয়েছে পশুবলি প্রথা । রীতি মেনে মোট 5টি পাঁঠা বলি দেওয়া হয়। এছাড়াও কুমড়ো ও আখ বলিও দেওয়া হয় ৷ ভোগ বিতরণও শাস্ত্রী বাড়ির পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। পরিবারের সদস্যরা জানান, সপ্তমী-অষ্টমী ও নবমীতে ভোগের ব্যবস্থা থাকে । আগে আমিষ ভোগের চল থাকলেও, এখন নিরামিষ ভোগ দেওয়া হয় ৷</p><p>রানি রাসমণির সময়কালে জমিদারি ফুলে ফেঁপে ওঠে </p><p>এ বিষয়ে পরিবারের এক সদস্য সন্দীপ ভট্টাচার্য বলেন, "400 বছর আগে সুন্দরবনের এই দক্ষিণ বারাসাতে ঘন জঙ্গল কেটে বসতি স্থাপন করেন বামাচরণ ভট্টাচার্য। তিনি এখানেই তন্ত্রসাধনা করে তান্ত্রিক হয়ে ওঠেন ৷ এছাড়াও রানি রাসমণির সময়কালে আমাদের জমিদারি ফুলে ফেঁপে ওঠে। আশুতোষ ভট্টাচার্যের সময়কাল থেকে আমাদের এই ভট্টাচার্যের বাড়ির দুর্গাপুজো এলাকায় পরিচিতি লাভ করে শাস্ত্রী বাড়ির দুর্গাপুজো হিসেবে।"</p>